পটুয়াখালী প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হানার আশঙ্কায় পটুয়াখালীতে দুর্যোগ প্রস্তুতি নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসকের দরবার হলে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েত উদ্দিনের সভাপতিত্বে সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বেলাল, পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য আবদুস সালাম আরিফসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বেলাল জানান, ঘূর্ণিঝড়ের সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েত উদ্দিন জানান, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ ও আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ফণীতে যাতে জেলার কোথাও কোনো ক্ষয়ক্ষতি না হয় সেজন্য জরুরি ভিত্তিতে এই সভা আহ্বান করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণী মোকাবেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় রেড ক্রিসেন্টের একাধিক টিম, ফায়ার সার্ভিসের একাধিক টিম, স্কাউটের একাধিক টিম ও বিভিন্ন সেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছে। জেলায় ১০৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালে ওষুধ রিজার্ভ রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার এবং প্রয়োজনে চর অঞ্চলে ব্যবহারের জন্য যানবাহন বিশেষ করে নৌযান প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সাইক্লোন সেল্টারসহ সকল আশ্রয় কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। বিভিন্ন মসজিদে মাইকিং করা হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হেমায়েত উদ্দিন জানান, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম ০১৩১৭৩৬৫১১৩ ও ০৪৪-১৬২৩৯৪ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। এছাড়াও পুলিশ কন্ট্রোল রুমের ০১৭৫২-৬০২৬৪৬ নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে। সাইক্লোন সেল্টারের নিরাপত্তার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে যে সকল গ্রাম পুলিশ রয়েছে তাদেরও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড় ফণী শক্তি বাড়িয়ে ভারতের ওড়িশার দিকে অগ্রসর হচ্ছে । দেশটির আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, মঙ্গলবার রাতে ঘূর্ণিঝড়টির অবস্থান ছিল চেন্নাইয়ের প্রায় ৬৯০ কিলোমিটার দূরের বঙ্গোপসাগরে।
আবহাওয়াবিদরা ধারণা করছেন, আগামী শুক্রবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি প্রচণ্ড শক্তিশালী (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) রুপ নিয়ে ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে। স্থলভূমিতে ঢোকার সময় তার গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৭০ থেকে ২০০ কিলোমিটার। ওড়িশায় আঘাত হানার পর ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ হবে পশ্চিমবঙ্গের দিকে।